কিসমিস (Kishmish), বা কিশমিশ, একটি শুকনো ফল যা আঙ্গুর থেকে তৈরি হয় এবং এটি স্বাস্থ্যকর খাবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।কিসমিসের অনেক উপকারিতা রয়েছে। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি শুকনো কিসমিস খেলে কি হয় এবং কিসমিসের অনেক উপকারি গুন সম্পর্কে জানতে পারবেন।
পেজ সূচিপত্র ঃ প্রতিদিন কিসমিস ভিজিয়ে খাওার উপকারিতা ও কিসমিস খাওার ৯ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
খাদ্য উপাদান নয়, বরং একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর খাদ্যবস্তু হিসেবেও পরিচিত। কিসমিসের উৎপত্তি মূলত মধ্যপ্রাচ্য ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে হলেও বর্তমানে এটি বিশ্বের নানা প্রান্তে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এটি খেতে যেমন মিষ্টি ও আকর্ষণীয়, তেমনি স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী।
কিসমিস শুধু স্বাস্থ্যগত দিক থেকে নয়, বরং রান্না ও মিষ্টান্ন তৈরিতেও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন মিষ্টি, পোলাও, খিচুড়ি, কেক ও পুডিংয়ে কিসমিস ব্যবহার খাবারের স্বাদ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। ছোট-বড় সকলের কাছেই এটি একটি প্রিয় খাদ্য, যা সহজেই সংরক্ষণ করা যায় এবং সারা বছরজুড়ে পাওয়া যায়।
পুষ্টিগুণের দিক থেকে কিসমিসে রয়েছে প্রচুর প্রাকৃতিক চিনি, যেমন ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ, যা ত্বরিত শক্তি জোগাতে সহায়তা করে। এ ছাড়াও এতে রয়েছে আঁশ (ফাইবার), আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং বিভিন্ন ভিটামিন, বিশেষ করে ভিটামিন বি গ্রুপ। কিসমিস হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরসনে কার্যকর। এছাড়াও এটি রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে, কারণ এবা কিশমিশ, একটি শুকনো ফল যা আঙ্গুর থেকে তৈরি হয় এবং এটি স্বাস্থ্যকর খাবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।কিসমিসের অনেক উপকারিতা রয়েছে, যেমন হজমশক্তি বৃদ্ধি, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা, রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করা, এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো।
কিসমিসের কিছু প্রধান উপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলো:
১। হজমশক্তি বৃদ্ধি:ঃ কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।
২। রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করেঃ কিসমিসে থাকা আয়রন রক্তাল্পতা (অ্যানিমিয়া) প্রতিরোধে সহায়ক, বিশেষ করে মহিলাদের জন্য এটি উপকারী।
৩। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ কিসমিসে থাকা পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৪। শক্তি সরবরাহ করেঃ কিসমিসে প্রাকৃতিক চিনি থাকে যা দ্রুত শরীরে শক্তি সরবরাহ করে।
৫। দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য রক্ষা করেঃ কিসমিসে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ত্বকের জন্য ভালো:কিসমিসের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।
৬। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধঃ কিসমিসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের কোষকে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে।
৭। ত্বকের জন্য ভালোঃ কিসমিসের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।
৮। দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়ঃ কিসমিসে থাকা ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
৯। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ কিসমিসে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ভিজানো কিসমিসে থাকা ফাইবার হজমপ্রক্রিয়া উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এটি অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটায়, যা পেটের গ্যাস, অম্বল এবং অন্যান্য হজমজনিত সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া কিসমিস লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ দূর করে।
কিসমিস, যা শুকনো আঙুর হিসেবে পরিচিত, এটি একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর খাদ্য। তবে কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে খেলে এর উপকারিতা আরও বহুগুণ বেড়ে যায়। রাতে কিছু কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে খালি পেটে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে শরীর সহজে পুষ্টি উপাদানগুলো শোষণ করতে পারে এবং কিসমিসে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা হজমে সহায়তা করে।
ত্বক ও চুলের জন্যও ভিজানো কিসমিস উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে উজ্জ্বল রাখে এবং চুল পড়া ও অকালে পাকা রোধে সহায়তা করে। নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং শরীর দ্রুত ক্লান্তি কাটিয়ে সতেজতা ফিরে পায়।
ত্বক ও চুলের জন্যও ভিজানো কিসমিস উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে উজ্জ্বল রাখে এবং চুল পড়া ও অকালে পাকা রোধে সহায়তা করে। নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং শরীর দ্রুত ক্লান্তি কাটিয়ে সতেজতা ফিরে পায়।
কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে, যা হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়ক। ফলে এটি রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এছাড়াও এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ও হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
অকালে পাকা রোধে সহায়তা করে। নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং শরীর দ্রুত ক্লান্তি কাটিয়ে সতেজতা ফিরে পায়।
সার্বিকভাবে, কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে খাওয়া একটি সহজ কিন্তু অত্যন্ত কার্যকর স্বাস্থ্যকর অভ্যাস, যা শরীর ও মনের সার্বিক উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কিসমিসের পুষ্টিগুণ
কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি, যেমন: গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ, যা শরীরে দ্রুত শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। তাই যারা দুর্বলতা অনুভব করেন বা অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন, তাদের জন্য কিসমিস একটি চমৎকার খাবার। এতে প্রচুর আয়রন থাকে, যা রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। বিশেষ করে নারীদের জন্য এটি একটি উপকারী খাবার হিসেবে বিবেচিত।
এতে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থ রয়েছে, যা হৃদযন্ত্র এবং হাড়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, আর ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁত শক্ত করে। ম্যাগনেসিয়াম পেশি সুস্থ রাখে এবং স্নায়ুর কার্যক্রম উন্নত করে।
কিসমিসে উচ্চমাত্রার ফাইবার বিদ্যমান, যা হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এটি অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ও হজমতন্ত্রকে সচল রাখে। পাশাপাশি এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা দেহের কোষকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়তা করে।
এছাড়াও, কিসমিসে রয়েছে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, যা স্নায়ুতন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায়ও এটি সহায়ক।
তবে মনে রাখতে হবে, কিসমিসে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকায় এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত, বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে। সাধারণত দিনে ৫-১০টি কিসমিস খাওয়া শরীরের জন্য যথেষ্ট।
সব মিলিয়ে, কিসমিস একটি সহজলভ্য ও উপকারী খাদ্য উপাদান, যা স্বাস্থ্যে
র জন্য নানাভাবে উপকার বয়ে আনে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অল্প পরিমাণে কিসমিস যুক্ত করলে শরীর সুস্থ ও প্রাণবন্ত থাকবে।
কিসমিস খাওার নিয়ম
কিসমিস খাওয়া স্বাস্থ্যকর অভ্যাস হলেও এটি সঠিকভাবে ও পরিমিত পরিমাণে খাওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিসমিস খাওয়ার কিছু কার্যকর ও স্বাস্থ্যকর নিয়ম দেওয়া হলো:
১. ভেজানো কিসমিস খাওয়া (সকালে খালি পেটে):
রাতে ৫-১০টি কিসমিস এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালি পেটে সেই কিসমিস ও পানি একসঙ্গে খেলে হজম ভালো হয়, লিভার পরিষ্কার থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
২. খাবারের পর/সঙ্গে কিসমিস খাওয়া:
দুপুর বা রাতের খাবারের পর ৫-৭টি কিসমিস খেলে মিষ্টির চাহিদা পূরণ হয় এবং খাবারের হজম ভালো হয়।
৩. মিষ্টান্ন ও রান্নায় ব্যবহার:
পায়েস, খিচুড়ি, পোলাও বা হালুয়ায় কিসমিস ব্যবহার করা যায়। এতে স্বাদ ও পুষ্টি দুটোই বাড়ে।
৪. দুধ বা ওটসের সঙ্গে:
দুধ, ওটস, বা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে কিসমিস খাওয়া পুষ্টিগুণ বাড়ায়। এটি বাচ্চাদের ও বড়দের জন্যই উপকারী।
খালি পেটে কিসমিস খাওার অপকারিতা
যদিও কিসমিস অনেক পুষ্টিকর এবং খালি পেটে খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে, তবে কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে এটি কিছু অপকারিতাও ডেকে আনতে পারে। নিচে খালি পেটে কিসমিস খাওয়ার সম্ভাব্য ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরা হলো:
১. অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা:
খালি পেটে কিসমিস খাওয়ার ফলে কারও কারও মধ্যে গ্যাস্ট্রিক, বুকজ্বালা বা অম্বল দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে যাদের হজম সমস্যা আছে।
২. অ্যালার্জি বা পেটের অস্বস্তি:
কিছু ক্ষেত্রে বাজার থেকে কেনা কিসমিসে রাসায়নিক (যেমন সালফার ডাইঅক্সাইড) থাকে, যা খালি পেটে খেলে অ্যালার্জি, বমি ভাব বা পেটের গণ্ডগোলের কারণ হতে পারে।
৩. ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা:
প্রতিদিন খালি পেটে অনেক কিসমিস খেলে অতিরিক্ত ক্যালরি শরীরে জমে যেতে পারে, যা ধীরে ধীরে ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
৪. দাঁতের সমস্যা:
কিসমিসে থাকা চিনি দাঁতে লেগে থাকতে পারে, যদি সকালে খাওয়ার পর ভালোভাবে মুখ না ধোয়া হয়।
৫. রক্তে চিনি বেড়ে যেতে পারে:
কিসমিসে প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ) বেশি পরিমাণে থাকে। খালি পেটে খেলে এই চিনি দ্রুত রক্তে শোষিত হয়, ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে।
কতটা কিসমিস খাওয়া নিরাপদ?
প্রতিদিন ৮–১২টি কিসমিস খাওয়া নিরাপদ ও উপকারী।
ডায়াবেটিস বা ওজন বাড়ার সমস্যা থাকলে ৫–৬টি কিসমিস যথেষ্ট।
কিসমিসে কোন অ্যাসিড থাকে
কিসমিসের মধ্যে কোন অ্যাসিড থাকে?
কিসমিসের মিষ্টি স্বাদের আড়ালেই লুকিয়ে আছে কিছু প্রাকৃতিক অ্যাসিড, যা শরীরের নানা উপকারে আসে। অনেকেই হয়তো ভাবেন, কিসমিসে শুধুই চিনিজাতীয় উপাদান থাকে, কিন্তু আসলে এর ভেতরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ জৈব অ্যাসিড (organic acid) রয়েছে, যেগুলো দেহের হজম প্রক্রিয়া, কোষের সুস্থতা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে। এর মধ্যে প্রধান অ্যাসিড হলো টারটারিক অ্যাসিড (Tartaric Acid), সাইট্রিক অ্যাসিড (Citric Acid), ম্যালিক অ্যাসিড (Malic Acid) এবং সামান্য পরিমাণে অক্সালিক অ্যাসিড (Oxalic Acid)।
টারটারিক অ্যাসিড হচ্ছে কিসমিসে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় এমন অ্যাসিড, যা প্রাকৃতিকভাবেই আঙুরে থাকে। এটি হজমে সহায়ক এবং শরীরের pH ব্যালেন্স রাখতে সাহায্য করে। আবার এই অ্যাসিড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, শরীরের কোষকে ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
ম্যালিক অ্যাসিড কিসমিসের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা হালকা টক স্বাদ এনে দেয় এবং দেহে শক্তি উৎপাদনে ভূমিকা রাখে। এটি হজমশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে এবং ত্বককে সতেজ রাখে। সাইট্রিক অ্যাসিড যদিও কিসমিসে কম পরিমাণে থাকে, তবুও এটি দেহকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে এবং খনিজ শোষণ বাড়ায়।
তবে এখানে একটা বিষয় মাথায় রাখা দরকার— কিসমিস প্রক্রিয়াজাত করার সময় কিছু সময় অতিরিক্ত সাইট্রিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয় সংরক্ষণের জন্য, যা খাদ্যগুণে খুব বড় ক্ষতি না করলেও অতিরিক্ত গ্রহণ করলে অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে।
সব মিলিয়ে, কিসমিসে থাকা এই প্রাকৃতিক অ্যাসিডগুলো কেবল স্বাদই বাড়ায় না, শরীরের ভেতরে নানা স্বাস্থ্যকর প্রক্রিয়ায়ও ভূমিকা রাখে। তাই কিসমিসকে শুধু মিষ্টি ফল না ভেবে, এর গভীরে থাকা এই উপকারী অ্যাসিডের দিকেও মনোযোগ দেওয়া উচিত।
কিসমিস খেলে গায়ের রং ফর্সা হয় কিনা
কিসমিস খেলে কি গায়ের রঙ ফর্সা হয়?
আমরা যারা গায়ের যত্ন নিয়ে একটু ভাবি, তারা প্রায়ই শুনে থাকি—“এই খাও, গায়ের রঙ ফর্সা হবে।” কিসমিস নিয়েও এমনই একটা প্রচলিত কথা আছে, বিশেষ করে ভেজানো কিসমিস খেলে নাকি গায়ের রঙ ফর্সা হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সত্যিই কি কিসমিস গায়ের রঙ ফর্সা করে দেয়?
উত্তরটা হলো—হ্যাঁ, কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে, কিন্তু সেটা সরাসরি গায়ের রঙ সাদা করে দেয় এমন না। কিসমিসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন, ভিটামিন B ও C, এবং ফ্ল্যাভোনয়েড ত্বকের গভীরে কাজ করে। যখন আমরা প্রতিদিন কিসমিস খাই, বিশেষ করে ভেজানো কিসমিস খালি পেটে খেলে, তা রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং ত্বকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। ফলস্বরূপ, ত্বক অনেকটাই উজ্জ্বল, মসৃণ এবং স্বাস্থ্যবান হয়।
তবে “ফর্সা” হওয়ার ধারণাটা আমাদের সমাজে একটু ভুলভাবে গেঁথে গেছে। প্রকৃতপক্ষে, কিসমিস কোনো ম্যাজিক ফল নয় যে খাওয়ার সাথে সাথেই গায়ের রঙ ধবধবে হয়ে যাবে। বরং এটি ত্বকের কোষে কাজ করে, মেলানিন উৎপাদনকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করে এবং দাগছোপ, রুক্ষভাব বা ক্লান্ত ত্বককে প্রাণবন্ত করতে সাহায্য করে।
আবার কিসমিসে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায়, যা শরীরের কোষে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়। এতে করে ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরে আসে, মুখের দিকে একটা গ্লো আসে — যেটাকে আমরা অনেক সময় ‘ফর্সা’ ভাবি।
সবশেষে বলা যায়, কিসমিস নিয়মিত খাওয়ার ফলে ত্বকের রঙ হয়তো নাটকীয়ভাবে ফর্সা না হলেও, নিঃসন্দেহে তা পরিষ্কার, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত হয়। তবে এর জন্য সময় ও নিয়মিততা দরকার — এবং অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও পরিমিত ঘুমকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
শেষ কথা
পরিশেষে, আমরা উপরোক্ত আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারলাম শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়, কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। এর পাশাপাশি আরও জানলাম কিসমিসের পুষ্টিগুন সম্পর্কে এবং কিসমিস খেলে ফর্সা হয় কিনা, কিসমিস খাবার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে। উপরের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি শুকনো কিসমিস খেলে কী হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন।
তাই আশা করি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি বেশি বেশি শেয়ার করে দিন। আর এই ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url